ফাঁসির মঞ্চে উঠে ধস্তাধস্তি করেছেন নিজামী

ফাঁসির মঞ্চে উঠতে চাননি জামায়াতে ইসলামের নেতা মতিউর রহমান নিজামী। তাকে জোর করে ফাঁসির মঞ্চে তুলতে হয়েছে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সংবাদকর্মীদের নিকট এ খবরটি নিশ্চিত করেছে।
কারা সুত্র জানায়, রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে নিজামীকে কনডেম সেল থেকে বের করে ফাঁসির মঞ্চে নেয়ার পথে তিনি ব্যাপক অনীহা প্রকাশ করেন। কনডেম সেল থেকে বের করার জন্য নিজামীকে তিন জল্লাদ মিলে টানাটানি করলে তিনি সেলের দরজার হাতলটি শক্ত করে ধরে রাখেন। টানাহ্যাঁচড়ার একপর্যায়ে তাকে কনডেম সেল থেকে বের করা সম্ভব হয়।

সূত্রটি আরও জানায়, নিজামী ফাঁসির মঞ্চে যেতে অসম্মতি জানালে জল্লাদরা বাধ্য হয়ে জোরপূর্বক তাকে কাঁধে উঠিয়ে মঞ্চ পর্যন্ত নিয়ে যায়। এবং মাথায় জমটুপি পরিয়ে দেয়। এরপর নিজামীকে যখন ফাঁসির মঞ্চে তোলা হচ্ছিলো, তখন তিনি বেশ কয়েকবার বসে পরেন। এবং মঞ্চে উঠতে অস্বীকার করেন। অতঃপর সাতজন কারারক্ষীর সহায়তায় জল্লাদরা শেষবারের মত নিজামীতে জোরজবস্তি করে ফাঁসির মঞ্চে তুলতে সক্ষম হয়। এসময় তিনি হাত পা ছুড়াছুড়ি করে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যান। এবং একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেন। সেই সুযোগেই ঝুলিয়ে দেয়া হয় কুখ্যাত এই যুদ্ধাপরাধীকে।

তবে সেখানেও বেশ বেগ পেতে হয় জল্লাদদের। ফাঁসির মঞ্চের মাঝখানে গোলাকারর ১২ ফুট গভীর গর্ত। আর উপরে খোলা ৮ ফুট। গর্তটি ঢাকা থাকে কাঠ দিয়ে। আর সেই কাঠের মাঝখানে দণ্ডিতকে দাঁড় করানো হয়। ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করার সময় রোলার টেনে কাঠ সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু নিজামী সেসময় এমনভাবে দাঁড়ান যে, তার দুই পা গর্তের বাইরে থাকে। বারবার বলার পরও তিনি দুই পা এক করছিলেন না। বরং তিনি গর্তের দুইদিকে দুই পা বিরাট ফাঁক করে দিয়ে রেখে গর্তে পড়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। জল্লাদ রাজু তখন নিজামীর দুই পা টেনে এক করে একটি দড়ি দিয়ে বেঁধে দেন। এরপর সফলভাবে ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব হয়।

এভাবেই বহু ঝামেলার মধ্য দিয়ে কার্যকর করা হয় নিজামীর মৃত্যুদণ্ড।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট